ডা: জাকির নাইক ---অলৌকিক আলোকবর্তিকা হাতে এক উত্তরাধিকারীর কথা

পেশায় তিনি একজন ডাক্তার। চেহারা এমন বলার মত কিছু ছিল না অথচ আমার মতে এই লোকটিই সেই লোক যিনি দায়িত্ব পেয়েছেন সেই অলৌকিক আলোকবর্তিকাটি বহন করার। একটু খুলেই বলি---

আমি ওয়াজ মাহফিলের খুব ভক্ত। একজন মুসলিম হিসাবে আল্লাহ রাসূলের কথা শুনতে ভালই লাগে কতটা মেনে চলি সেটা ভিন্ন প্রশ্ন। তবে শুনতে বরাবরই আগ্রহী। ওয়াজ মাহফিল ভাল লাগার আর একটা কারণ হচ্ছে এর সুর। যে কোন শ্র“তিমধুর সুরই আমাকে আকৃষ্ট করে। সে জন্য বাজনাসহ গান কে ইসলামে অপছন্দনীয় বলা হলেও গান বেশিই শোনা হয়।

ওয়াজ মাহফিলের কথাটা এজন্যই আনলাম যে ওয়াজে আগে হুজুর রা প্রায়ই বলতেন যে আলেম ওলামাদের সাথে সবসময় ভাল ব্যবহার করবেন কারণ “আলেম ওলামারা হচ্ছেন নবী রাসূলদের উত্তরাধিকারী।” কথাটা এভাবেই মনে গেঁথে ছিল এতদিন। আমি যতদূর জানি আলেম শব্দটি এসেছে এলেম শব্দ হতে যার অর্থ “জ্ঞান” সেই হিসাবে আলেম মানে জ্ঞানী। তার মানে হচ্ছে জ্ঞানীরাই হচ্ছে নবীদের উত্তরাধিকারী।[রাসূল (স) বলেন-ধর্ম জ্ঞানে জ্ঞানী গন নবীদের উত্তরাধিকারী---আবু দাউদ,তিরমিযি] খাঁটি কথা। আমরা জানি প্রত্যেক নবী রাসূলদের একটা জিনিস ছিল সেটা হল মু’জিযা অর্থাৎ অলৌকিক ক্ষমতা। যে ক্ষমতা সমসাময়িক সকল শক্তিকে পরাস্ত করতে সক্ষম। উদাহরণস্বরুপ - মুসা (আ) এর লাঠি, ইসা আ এর মৃত মানুষকে জীবিত করা ইত্যাদি। শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ স এর অনেক মুজিযা ছিল তবে তার সর্বশ্রেষ্ট মুজিযা হল আল কুরআন। আল কুরআন কেন সর্বশ্রেষ্ঠ মুজিযা তা জাকির নাইকের লেকচার গুলো শুনলেই বোঝা যাবে।

মূল আলোচনায় আসি। জ্ঞানীরা নবী রাসূলদের উত্তরাধীকারী তার মানে জ্ঞানীদেরও অলৌকিক ক্ষমতা থাকা উচিত। যুক্তি তো তাই বলে। ইসলাম এ বিষয়েও বলেছে। যেহেতু জ্ঞানীরা নবী রাসূলদের উত্তরাধিকারী তবুও তারা মর্যাদায় কখনও তাদের সমান নন। তাই তাদেরকে এমন কোন অলৌকিক ক্ষমতা দেয়া হয় না যা সমসাময়িক সব শক্তিকে পরাস্ত করতে সক্ষম। তবে তাদের একটি জিনিস দেয়া হয় সেটাকে বলে কারামত অর্থাৎ তাক লাগানো বা চমক লাগানো এমন কিছু । তো আমি ওয়াজে যখন এটা শুনলাম তখন চিন্তা করলাম আলেম ওলামারা যদি নবী রাসূলদের উত্তরাধীকারী হয়েই থাকে তাহলে তাদের কারামত অর্থাৎ তাক লাগানো বা চমক লাগানো বস্তুটি কোথায়?

আমাদের দেশে অনেক বড় বড় ওলামা ছিলেন এবং আছেন কিন্তু বেশিরভাগের মধ্যেই সত্যিকার কারামত অর্থাৎ চমক লাগানো ক্ষমতাটি নেই । তবে এ দিক থেকে তাদের এলেম বা জ্ঞান কে খাটো করে দেখার উপায় নেই । তারাও জ্ঞানী । কিন্তু আলোচনার বিষয় হচ্ছে নবী রাসূলদের উত্তরাধিকারী নিয়ে যার একটি বিশেষ ক্ষমতা বা কারামত থাকবে। গত ১ থেকে ১.৫ বছর জাকির নাইক এর লেকচার শোনার পর আমি ব্যক্তিগতভাবে সুনিশ্চিত যে জাকির নাইক-ই হচ্ছেন সেই লোক যিনি সেই উত্তরাধিকারী।

যেহেতু তিনি নবী রাসূলদের উত্তরাধিকারী সেহেতু তার একটি কারামত বা বিশেষ ক্ষমতা থাকা উচিত। যারা তার লেকচার শুনেছেন তারা একবাক্যে স্বীকার করবেন যে তার সেই বিশেষ ক্ষমতা আছে । সেটি হচ্ছে তার স্মৃতিশক্তি। অবিশ্বাস্য স্মৃতিশক্তির অধিকারী ডা. জাকির নাইক। তার স্মৃতিশক্তি কতটা অবিশ্বাস্য তা তার বিভিন্ন লেকচার গুলো দেখলেই বোঝা যাবে। আমি এখানে সংক্ষেপে তার স্মৃতিশক্তির বর্ণনা করব ।

এটা বলতে কোন বাধা নেই জাকির নাইক- ই সম্ভবত পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম ব্যক্তি যিনি পৃথিবীর সব প্রধান ধর্মগ্রন্থ গুলো পুরোপুরি মুখস্থ পারেন। শুধু যে মুখস্থ পারেন তাই নয় তিনি যেকোন সময় সেগুলোর পৃষ্ঠা কিংবা লাইন বা প্যারা বা অনুচ্ছেদ অনুযায়ী উদ্ধৃত(Quote) করতে পারেন। এটা ছাড়াও তিনি যেসব বই পড়েছেন সেগুলো উদ্ধৃত করার প্রয়োজন হলে সেগুলোর কোন পৃষ্ঠা থেকে বলছেন তাও উদ্ধৃত করেন। এ এক অবিশ্বাস্য ক্ষমতা। এই অবিশ্বাস্য ক্ষমতাকে যুক্তিবাদীরা প্রকৃতি প্রদত্ত বলবে হয়ত। কিন্তু বিশ্বাসীদের কাছে এই ক্ষমতা অলৌকিক মনে হতে বাধ্য। আল্লাহ অনুগ্রহ করে কাউকে এই ক্ষমতা না দান না করলে এটা অসম্ভব ।

আল্লাহ যুগে যুগে তার বাণী পেীঁছে দেয়ার জন্য কিছু কিছু লোককে নির্বাচন করেন। এঁদের নবী - রাসূল বা বার্তাবাহক বলা হয়। সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সঃ) কে শেষ নবী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে সর্বশক্তিমান আল্লাহ এই বার্র্তাবাহক প্রেরণ বন্ধ করেন। তার কারন হচ্ছে মানুষের কাছে তার যতটা বাণী পেীঁছানো দরকার ছিল তা সম্পূর্ণ হয়েছে শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) দ্বারা। শেষ নবীর পরবর্তী যুগের মানুষের জন্য দরকার সেই সব আলেম বা জ্ঞানীদের যারা আল্লাহ এবং নবীর বাণী যারা জানে না তাদের কাছে পৌঁছে দেবেন এবং যারা অবিশ্বাস করে তাদের কাছে যুক্তিপ্রমাণ সহ উপস্থাপন করবেন।

জাকির নাইক সেই কাজটিই করে যাচ্ছেন.. তার যে অবিশ্বাস্য স্মৃতিশক্তিই আছে তাই নয় তিনি এমন নিরেট যুক্তি উপস্থাপন করেন যে তা না মেনে উপায় থাকে না ।
তিনি অনেক বিভিন্ন ধর্মের অনেক বড় বড় পন্ডিতদের সাথে বিতর্ক করেছেন , বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সাথে সেই বিষয়ে বিতর্ক করেছেন.. এবং বিতর্কের ফলাফল কী হয়েছে তা আপনারা বিতর্ক গুলোর ভিড়িও দেখলেই বুঝতে পারবেন। এখন বাংলাদেশের ইসলামিক টিভির কল্যানে অনেকে এগুলো দেখেছে এবং জ্ঞানের অমিয় সুধা পান করে নিজেদের ধন্য করেছে..

তবে এখানে একটি কথা জাকির নাইকের বাংলায় ডাবিংকৃত লেকচারগুলো থেকে অনেক সময়ই তিনি যেটা বলতে চেয়েছেন তা স্পষ্ট হয় না । সব ধরণের অনুবাদেই এ সমস্যাটি দেখা দেয়.. তাই আমার সাজেশান হল যারা ইংরেজী বুঝতে পারেন তারা peace tv তে তার ইংরেজী লেকচার গুলো দেখবেন।

আপনি মুসলমান,হিন্দু,খ্রিস্টান,নাস্তিক যাই হোন না কেন আপনার মনে জমে থাকা প্রশ্নের সন্তোষজনক জবাব তিনি দিতে পারবেন বলেই আমার বিশ্বাস। আমার কাছে মনে হয় হিন্দু ধর্ম বিষয়ে তার চেয়ে জ্ঞানী লোক হিন্দু পন্ডিতদের মধ্যেও নেই । এর কারন হল তিনি একবার ভারতের অন্যতম শীর্ষ হিন্দু পন্ডিত শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর এর সাথে বিতর্ক করেন । সেখানে রবিশঙ্কর বলেছেন তিনি জাকির নাইকের মত স্কলার নন!

তাকে যুক্তি দিয়ে হারান খুবই কঠিন। কারণ যে ধর্মের লোক তাকে প্রশ্ন করবে তাকে তিনি তার ধর্মগ্রন্থ দিয়েই উত্তর দিতে সক্ষম। আর যদি নাস্তিক হয় তাহলে যুক্তি দিয়ে তিনি উত্তর দেন । কারণ নাস্তিক রা সবকিছুতেই যুক্তি খুঁজে। তিনি যুক্তি দিয়েই প্রমাণ করেছেন মৃত্যুর পরে একটি জীবন আছে এবং যেখানে মানুষকে তার পৃথিবীর কাজকর্মের জবাবদিহি করতে হবে।
তাই আমি মনে করি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে আস্তিক নাস্তিক সবারই তার লেকচার শোনা উচিত..